Sankars Creation

ডোর বেল টা বাজানোর পরেই অতীন বুঝতে পারলো আজ বাড়ির পরিবেশটা অন্য রকম। রনির চিৎকার নেই , মায়ের সাবধান করে চেঁচানো নেই ! বেশ কিছুক্ষন দাঁড়ানোর পর মা কে দরজা খুলতে দেখে অতীন বললো
-কি ব্যাপার আজ বাড়িতে কেউ নেই নাকি?
অতীনের মা বললো
-ভেতরে আয়।
-কি ব্যাপার মা সব গেলো কোথায় ?
আজ চিত্রার মা – দাদা এসেছিলো। তোর বাবা ওদের আর চিত্রা-রনি কে বাসে তুলে দিতে গেছে। তুলে দিতে গেছে।
-তার মানে ? ওদের তো সামনের সপ্তাহে আসার কথা !
-হ্যাঁ , কিন্তু চিত্রার দাদার অফিসের কাজে আগেই আসতে হলো। সামনের সোমবার গুজরাট ফিরে যাচ্ছে। তোর অফিসে চিত্রা ফোন করেছিলো। তুই তখন বেরিয়ে পড়েছিস। ওরা অপেক্ষা করছিলো। আমিই পাঠিয়ে দিলাম কদিন বৌমা মা-দাদার কাছে থেকে আসুক। আর হ্যাঁ তোকে শনিবার গিয়ে রবিবার চিত্রা আর রনিকে নিয়ে আসতে বলেছে। রাতে তোকে ফোন করবে।
বাবা মা চিত্রা আর রনি কে নিয়ে জমজমাট সংসার অতীনের। একজন কেউ না থাকলেই অতীনের বিরক্তি লাগে।

জামা কাপড় ছেড়ে অতীন তোয়ালে পরে অভ্যেস মত মায়ের পাশে শুয়ে পড়লো। এটা ওর বরাবরের অভ্যেস। সারাদিনের খুঁটিনাটি গল্প হবে এখন। চিত্রা প্রথম প্রথম বিরক্ত হতো। কিন্তু সারাদিনের অফিস আর যাতায়াতের ধকলের পর মায়ের পাশে শুয়ে থাকলে কি আরাম ! মাথার চুলে বিলি কেটে দিতে দিতে মা বললো
-চা খাবি তো !
– খাবো একটু শুয়ে নিই , ভীষণ ক্লান্ত লাগছে। ঘুমিয়ে পড়লো অতীন।
হটাৎ ফোনের রিং শুনতে শুনতে তন্দ্রা কেটে গেলো। মা ওকে ঠেলে বললেন
– ওঠ ,বোধহয় চিত্রা পৌঁছে ফোন করেছে।অতীন হ্যালো বলতেই শুনতে পেলো একটা বাচ্চার গলা।
-কে রনি ?
-আমি গুড্ডু , আপনি কে ?
-তার মানে ? তুমি জানো না কাকে ফোন করছো ?
-কাকু প্লিজ ফোন টা রাখবেন না, আমার খুব ভয় করছে। আমি এমনি এমনিই একটা নম্বর ডায়াল করেছি। আসলে একা একা আমার খুব ভয় করছে। তাই কথা বলতে চাইছি। প্লিজ একটু কথা বলুন।
– একা কেন? তুমি কোথায় থাকো ?
-আমরা ফ্ল্যাটে থাকি বাবা মা অফিস থেকে এখনো ফেরে নি , আর মিস আমাকে কোচিং করে কখন  চলে গেছে। বাবা মা কখন ফিরবে কাকু ?
অতীনের খুব বেশি কথা বলার অভ্যেস নেই তবু মায়ের হাত থেকে চায়ের কাপ টা নিয়ে বাচ্চা ছেলেটার সাথে কথা বলতে লাগলো।

সন্ধ্যেবেলা শুধু না -দুপুরেও ঘুমোয় না এখন অতীন। আজ কখন কাগজ পড়তে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো ! চোখ মেলে দেখলো রকিং চেয়ারের পাশে টেবিলে ট্রের ওপর ফ্লাস্ক আর কাপটা ডিশের ওপর উল্টে রাখা। কাজের মেয়েটা রোজ রেখে চলে যায় । আজ আর হাতে চায়ের কাপ তুলে দেবার মতো কেউ নেই।
হটাৎ সেদিনের বাচ্চা ছেলেটার কথা মনে পড়ে গেলো। এখন বাড়িটা সেই বাচ্চা ছেলেটার মতোই ফ্লাট হয়ে গেছে। মা-বাবা নেই, চিত্রা নেই , রনি অস্ট্রেলিয়ায় সেটল করেছে। ধীরে ধীরে ফোনটার দিকে হাত বাড়ালো অতীন। একটা এলোমেলো নম্বর ডায়াল করলো। ওপাশে রিং হচ্ছে। একটা ভারী গলার আওয়াজ
– হাল্লো।
অতীন বলে ফেললো
-একটু কথা বলবেন প্লিজ, বড্ডো একা লাগছে।

Let us enjoy every day as a new year. This site calls for everyone to be in the realm of creation which can be anything- writing, gardening, drawing, origami even some items created for home decoration that gives you satisfaction and makes the day a new year. That gives meaning to life. Let us share our creations on this page.

View Comments

There are currently no comments.
Next Post